জিলহজ্জ মাসের রোজা কয়টি এবং জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত


আরবি মাসের শেষ তম মাস অর্থাৎ১২ তম মাস হল জিলহজ্জ মাস। এই মাসের রোজা এবং এই মাসের ফজিলত এর গুরুত্ব অত্যাধিক। এই মাসের একটি রোজা এক বছরের রোজার সমান। তাই বন্ধু আমাদের জিলহজ্জ মাসের রোজা কয়টি এবং জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জানা প্রয়োজন।
তাইতো বন্ধুরা আমি এই পোষ্টের মাধ্যমে জিলহজ্জ মাসের রোজা কয়টি এবং জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আসুন বন্ধুরা দেরি না করে জেনে নেই,জিলহজ্জ মাসের রোজা কয়টি এবং জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত সম্পর্কে।

ভূমিকা

জিলহজ্জ মাস বছরে চারটি সম্মানিত মাসের একটি। এ মাসের বৈশিষ্ট্য অধিক। জিলহজ মাসের নবম দিন ও রাত আল্লাহ তায়ালার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কেননা এই দিনটি আরাফাতের ময়দানে সমাহিত হওয়ার দিন। আর রাত্রি হল মুজদালিফায় অবস্থানের রাত। হাদিসে বর্ণিত রয়েছে মহানবী (সা) বলেন, যে আরাফার দিনে রোজা রাখল অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা তার এক বছর পূর্বের এবং এক বছর পরে তথা দুই বছরের পাপগুলো ক্ষমা করে দেবেন। 

আরো পড়ুনঃ সুরা ইয়াসিন এর বিষয়বস্তু 

তবে যারা হজ আদায়ের ঐদিন আরাফাই থাকবেন তাদের জন্য এই বিধান নয়। কেননা মহানবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম আরাফার অবস্থানকালী এই রোজা রাখেনি। আরাফায় যারা অবস্থান করবেন তারা যদি রোজা রাখেন তাহলে হয়তো অন্যান্য ইবাদত করতে তাদের কষ্ট হবে। তাই আরাফার দিন তাদের রোজা না রাখাই উত্তম ।

জিলহজ্জ মাসের রোজা কয়টি

জিলহজ্জ মাসের রোজা কয়টি এবং জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত এ প্রসঙ্গে আমরা জানবো জিলহজ মাসের রোজা কয়টি। জিলহজ মাসের শুরু থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ সাঃ সিয়াম পালন করতেন এবং যারা হজে যাবেন না, তারা জিলহজ মাসের ৯ তারিখ, যেটা আরাফার দিবস রয়েছে ।আরাফার দিবসের সিয়াম পালন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা যদি মনে করেন এই নয় তিনি সিয়াম পালন করবেন তাহলে করতে পারেন।

আবার কেউ যদি মনে করেন, এর বেশিরভাগ সিয়াম পালন করবেন সেটাও করতে পারেন। নবী কারীম (সা)বলেছেন, জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় আমল, এমনকি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের চেয়েও বেশি প্রিয় আমল। তাই এই কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণে এই দিনগুলিতে সিয়াম পালন করা আমাদের উচিত। তবে ঈদের দিন সিয়াম পালন করতে পারবেন না।

জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত

জিলহজ্জ মাসের রোজা কয়টি এবং জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত এই পোস্টটির মাধ্যমে আমরা জানব জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত সম্পর্কে। জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত সম্পর্কে মহানবী (সা) বলেন, এমন কোন দিন নেই যে, দিনগুলোতে ইবাদত আল্লাহর কাছে জিলহজের প্রথম১০ এর ইবাদতের থেকে অধিক প্রিয়। জিলহজের প্রথম দশকের প্রত্যেকদিনের রোজা এক বছরের রোজার সমতুল্য। প্রত্যেকটা রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের সমতুল্য। (তিরমিজি)

আরো পড়ুনঃ সূরা ফাতিহা বাংলা অর্থসহ এর ফজিলত

জিলহজ্জ মাস হলো আরবি ১২ মাসের সর্বশেষ মাছ অর্থাৎ আরবি মাসের ১২ তম মাসি হলো জিলহজ্জ মাস। প্রত্যেক মুসলমানদের ক্ষেত্রে রমজান মাসে রোজা পালন ছাড়া বেশ কিছু রোজা রয়েছে সেই রোজাগুলো একজন মুসলমান ব্যক্তিকে ইহকাল ও পরকাল জগতে মুক্তি দেয়। রমজান মাসের রোজা একজন মুসলমানদের জন্য ফরজ ইবাদত আর অন্যান্য মাসের রোজা নফল ইবাদত।

যদিও জিলহজ মাসের মাসের রোজা গুলো নফল ইবাদত তবু এই রোজাগুলোতে বিশেষ ফজিলত ও বরকত রয়েছে। মাস অতি গুরুত্বপূর্ণ এই রোজা অত্যন্ত মর্যাদা সম্পন্ন তাই এই রোজা পালন করার জন্য আমাদের মধ্যে অনেক মুসলিম ভাই ও বোনেরা বেশ আগ্রহী। নিম্নে জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে এই দিবসগুলোর রাত্রি সমূহের শপথ করেছেন। আমরা জানি আল্লাহতালা যখন কোন বিষয়ের শপথ করেন তখন তা তার গুরুত্ব ও মর্যাদার প্রমাণ বহন করে। তিনি  ইরশাদ করেন, "শপথ ফজরের ও দশ রাতে"।

রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন; জিলহজের প্রথম ১০ দিন হল দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ দিন। এ প্রসঙ্গে বহু হাদিস এসেছে যার কয়েকটি তুলে ধরা হলো-

সাহাবী ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন নেক আমল করার মতো আল্লাহর নিকট প্রিয় আর কোন আমল নেই। তারা প্রশ্ন করলেন যে হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর পথে জিহাদ করা কি তার চেয়ে প্রিয় নয়?রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন না, আল্লাহর পথে জিহাদও নয়। তবে ওই ব্যক্তির কথা আলাদা যে তার প্রাণ ও সম্পদ নিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদে বের হয়ে গেল অতঃপর তার প্রাণ ও সম্পদ কিছুই ফিরে এলোনা।

আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত নবী কারীম বলেন, এ দশ দিনে আমল করার চেয়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রিয় ও মহান কোন আমল নেই। তোমরা এই সময় তবলিল, তাকবীর, তাহমিদ বেশি করে পাঠ কর।

আল্লাহর রাসূল (সা) এই দিনগুলোতে নেক আমল করার জন্য তার উম্মতকে উৎসাহিত করেছেন।

নবী কারীম এই দিনগুলোতে বেশি বেশি করে তাহলিল ও তাকবির পাঠ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন আলোচিত হয়েছে উপরে ইবনে আব্বাসের হাদিসে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন-যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হতে যা রিযিক হিসেবে দান করেছেন তার ওপর নির্দিষ্ট দিন সমূহে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে। এই আয়াতের নির্দিষ্ট দিন সমূহ বলতে জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন কে বোঝানো হয়েছে।

জিলহজ মাসের প্রথম দশকে রয়েছে আরাফা ও কুরবানীর দিন। আর এই দুটো দিনের রয়েছে অনেক বড় মর্যাদা। যেমন হাদিসে এসেছে-আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত যে রাসুলের সাঃ বলেছেন ,আরাফার দিন আল্লাহর রাব্বুল আলামীন তাঁর বান্দাদের এত অধিক সংখ্যক মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন যা অন্য দিনে দেন না। তিনি এ দিনে বান্দার নিকটবর্তী হন ও তাদের নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করে বলেন-তোমরা কি বলতে পারো আমার এই বান্দাগণ আমার কাছে কি চায়? আরাফা অর্থাৎ জিলহজ মাসের নবম তারিখ দিনটি ক্ষমা ও মুক্তির দিন।

আরো পড়ুনঃ বাংলা অর্থসহ সূরা হাশরের শেষের তিন আয়াত এবং এর ফজিলত

জিলহজ মাসের প্রথম দশকের এই দিনগুলো এমন মর্যাদা সম্পন্ন যে এই দিনগুলোতে সালাত ,সাওম, সাদকা, হজ ও কুরবানী আদায় করা হয়ে থাকে। অন্য কোনদিন এমন পাওয়া যায় না যাতে এতগুলো গুরুত্বপূর্ণ নেক আমল একত্রিত হয়।

শেষ কথা

জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিবস অধিক ফজিলতপূর্ণ -এ ব্যাপারে কোন মতভেদ নাই। কারণ এই বিষয়ে অসংখ্য দলিল ও প্রমাণ রয়েছে। তাইতো বন্ধুরা জিলহজ্জ মাসের রোজা কয়টি এবং জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত। বন্ধুরা আপনারা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে জিলহজ্জ মাসের রোজা কয়টি এবং জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে ক্ষমা করে দেবেন অথবা কমেন্টসের মাধ্যমে জানাবেন।-ধন্যবাদ


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url